শিরোনাম দেখেই অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এটা কিভাবে সম্ভভ?
একজন নতুন ব্লগার কিভাবে ভাইরাল পোস্ট লিখতে পারে! তবে হ্যাঁ
সম্ভব। একটু কঠিন হলেও কিছু
বিষয় মেনে চললে অবশ্যই প্রথম থেকেই ভাইরাল পোস্ট লেখা সম্ভব।
সব ব্লগারই চায় তার পোস্টটি হাজার হাজার লোক পড়ুক। সেই প্রত্যাশায় আপনিও
একটি চলমান বিষয় নিয়ে গবেষনা করলেন, যথাযথ হেডলাইন
দিলেন এবং পোস্টটি তৈরিতে আপনার মন-প্রান দিয়ে লিখলেন। তারমানে এই নয় যে আপনার পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। এতকিছুর পরেও আপনার
পোস্টটি ভাইরাল না হওয়ার পিছনে একটি কারণ রয়েছে। আর সেটি হলো যথাযথ লোকের কাছে পৌছানোর অভাব। আপনি যদি আপনার পোস্টটি
পড়ার জন্য যথোপযুক্ত লোকের কাছে সেটি পৌছে না দিতে পারেন তাহলে আপনার সমস্ত চেষ্টাই
বৃথা হয়ে যেতে পারে।
ভাইরাল পোস্ট আসলেই কি?
আপনি কিভাবে যথাযথ লোকের কাছে পৌছাবেন সেটি বলার আগে ভাইরাল
পোস্ট কি আসলেই সেটি জানা দরকার। একটি পোস্ট তখনই ভাইরাল হয় যখন সেটি একাধিক লোকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ
হয়। স্বাভাবিকভাবে বলতে
গেলে বলতে হয়, একটি পোস্ট তখনই ভাইরাল হবে যখন আপনার পোস্টটি
কেউ পড়বে এবং ভালোভাবে সেটি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করবে। এটা খুব সহজেই করা যায়।
চলুন দেখে নিই, কিভাবে একটি
পোস্টকে ভাইরাল করা সম্ভব।
স্টেপ-১: নিদ্দিষ্ট বিষয় খুঁজে বের করা
সাধারণত দু’টি বিষয় মেনে চললে একটি সফল বিষয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব। প্রথমত বর্তমানে আলোচিত
এমন বিষয় নির্ধারণ করা। কিভাবে ব্লগিং আইডিয়া পাবেন এ বিষয়ে আর্নট্রিক্সে প্রকাশিত ‘ব্লগিং আইডিয়া পাওয়ার ৮ কিলার টিপস’ লেখাটি পড়তে পারেন।
উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, আপনি যদি টুইটার নিয়ে ব্লগিং করেন তাহলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীন। তবে বর্তমানে আলোচিত
দ্রুত বর্ধনশীল সামাজিক যোগাযোগ সাইট পিন্টারেস্ট নিয়ে লেখালেখি করলে সফলতার সম্ভাবনা
রয়েছে। কারণ ব্লগাররা ও মার্কেটাররা
এটি নিয়ে তাদের ব্যবসায়িক পরিধি বাড়ানো ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের পথ খুঁজছেন।
আর এই ধরনের বিষয় খুঁজতে আপনার নিশ বিষয়ক ব্লগ পড়তে হবে নিয়মিত। একই সঙ্গে এই বিষয়ে
গুরুত্বকপূর্ণ নোট রাখা, কমেন্ট করা,
শেয়ার করার মাধ্যমে রিলেটেড বিষয়গুলো নিয়ে গবেষনা করতে হবে। ভিজিটররা আসলেই কি
চায়, তাদের প্রত্যাশা কি সেটা এসব ব্লগ থেকেই পাওয়া যাবে। তাদের সকল প্রত্যাশা
পূরণ করে কন্টেন্ট লিখতে পারলে অবশ্যই ভালো ভিজিটর পাওয়া সম্ভব।
দ্বিতীয়ত আপনাকে আপনার নিশ নিয়ে কমপক্ষে পাঁচটি পোস্ট লিখতে
হবে। পোস্টগুলো অবশ্যই রিলেটেড
হলে ভালো হয়। যেমন আপনি যদি ‘পিন্টারেস্ট ব্যবহারের সাইটে ট্রাফিক আনা” নিয়ে একটি পোস্ট লেখেন। তাহলে ‘পিন্টারেস্ট ব্যবহার করে সফলতা পাচ্ছে এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান’ এ ধরনের আরেকটি পোস্ট লিখতে পারেন। এভাবে রিলেটেড ও বিভিন্ন আঙ্গিকে একই বিষয়ে
পোস্ট লিখলে সেটি ভাইরাল করা সম্ভব। কারণ সেখানে একজন পাঠক এক জায়গাতেই অনেক তথ্য পাচ্ছেন বা তার
চাহিদা মেটাতে পারছেন।
স্টেপ-২: চারটি ব্লগে গেস্ট পোস্ট লিখুন
আপনি আপনার নিশ বা টপিক পেয়ে গেলে সেটি সম্পর্কে চারটি ব্লগে
গেস্ট পোস্ট লিখুন। কিভাবে গেস্ট পোস্ট লিখবেন সেটি সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিলে অনেক তথ্য পাবেন। এসব জনপ্রিয় ব্লগে
পোস্ট করলে আপনি অনেক ফলোয়ার পাবেন। যেটি থেকে আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ভালো হবে। পরোক্ষভাবে আপনার নিজস্ব
ব্লগে আসার জন্য ভিজিটররা উৎসাহিত হবে।
স্টেপ-৩: সময় মেনে পোস্ট দেওয়া
গেস্ট পোস্ট করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয় মেনে চলা
উচিত। সেটি হলো একই সময়ে
একাধিক ব্লগে পোস্ট করা। তাহলে পাঠকরা সবক্ষেত্রে আপনার বিচরণ অনুভব করবে। আপনার অ্যাক্টিভিটি
তাদেরকে আপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে অনুপ্রানিত করবে। তবে কোনোভাবেই একই লেখা অন্য ব্লগে পোস্ট
করা যাবে না।
এই কাজটি সফলভাবে করার জন্য, আগামী ২ মাসে কোথায় কি পোস্ট করবেন সেটি সেটির একটি সিডিউল করুন। অনেক জনপ্রিয় ব্লগ
আছে যারা রিভিউ ও পাবলিশ করার জন্য অনেক সময় নেয়। দেখা যাচ্ছে আপনার আগেই বিভিন্ন পোস্টের লাইন
পড়ে গেছে। এক্ষেত্রে আপনার পোস্টটি পাবলিশ হতে সময় লাগবে। তবে আপনি যদি পরিকল্পনা অনুযায়ি পোস্ট সাবমিট
করেন ও সেটি আপনার পাবলিশ করার তারিখটি নির্ধারণ করে দেন তাহলে ব্লগগুলো আপনার লেখাকে
রিভিউ করে সময়মতো পাবলিশ করবে।
স্টেপ-৪: নিজের ব্লগে পোস্ট করা এখন আপনি জনপ্রিয় ৪টি ব্লগে চারটি পোস্ট পাবলিশ করেছেন। বাকি রয়েছে আর একটি
পোস্ট। এটি আপনার নিজস্ব ব্লগে
পাবলিশ করুন। তবে বিভিন্ন ব্লগে আপনার পোস্টগুলো পাবলিশ হওয়ার ২/৩ দিন আগে আপনার ব্লগে পোস্টটি
পাবলিশ করুন।
স্টেপ-৫: ব্লগারদের ইমেইল করা
আপনার লেখাগুলো যে আপনার নিজের ব্লগ ও অন্যান্য ব্লগে পাবলিশ
হয়েছে সেটি সম্পর্কে অন্যান্য ব্লগারদের ইমেইল করুন। আপনার লেখাগুলো কতোটা রিলেটিভ সেটি প্রকাশ
করার সুযোগ পাবেন এর মাধ্যমে। এতে আপনার পোস্টের শেয়ার, কমেন্ট, লাইকের পরিমান বাড়বে এবং আপনি এগিয়ে যাবেন। এছাড়া অন্যান্যদের
থেকে আপনার দুর্বলতাগুলোও জানার সুযোগ পাবেন।
উদাহরণস্বরুপ, এখানে একটি
ইমেইলের স্যাম্পল কপি প্রকাশ করা হলো:
Hey
(Popular blogger),
I
wanted to let you know that I created a follow up post to the one that went
live on (date the post went live) that I think your readers will enjoy.
‘SEO’ is a hot topic these days
and I couldn’t possibly provide all of the information in one post. I would
love to know what you think.
Regards,
Tapos
এই মেইলটির মাধ্যমে ঐ ব্লগারদের কাছ থেকে আপনার পোস্টটি শেয়ার
পাওয়া যাবে। কিন্তু এখানে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য কোনো অনুরোধ করা হয়নি। এটাই ইমেইল করার মূল
বিষয়! তবে কখনোই এটি যেনো স্প্যামিংয়ের পর্যায়ে না পড়ে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এতে ব্লগারদের সঙ্গে
সম্পর্ক শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
শেষ কথা
আপনাকে নিজস্ব ব্রান্ডিং বা পোস্টকে ভাইরাল করার জন্য সবসময়ই
যে অন্যান্য ব্লগে গেস্ট পোস্ট করে যেতে হবে এমনটি নয়। আপনি ২/৩ বার এই কাজটি যথাযথভাবে করতে পারলে
আপনার ভালো ফলোয়ার পাবেন। যারা আপনার ব্লগ নিয়মিত পড়বে এবং আপনি কোথায় কি লিখছেন সেটি
খেয়াল রাখবে। এরপর থেকে তারাই আপনার পোস্ট বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করবে, কমেন্ট করবে, লাইক করবে। তবে এই কাজগুলো করতে
পারলেই যে আপনার পোস্টটি ভাইরাল হবে এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। কারণ আপনি পাঠক বা
অন্যান্য ব্লগারদের মধ্যে কতোটা প্রভাব ফেলতে পারছেন তার উপরে নির্ভর করবে সমগ্র বিষয়টি।
তবে নি:সন্দেহে বলা যায়, এটি একটি সঠিক প্রসেস। এই পথে সঠিকভাবে এগিয়ে গেলে অবশ্যই সফলতা সম্ভব। পৃথিবী আপনার কাছ থেকে
জানতে চায়, আপনি কি দিতে পারবেন সেটি জানিয়ে দিন যত তাড়াতাড়ি
সম্ভব।
0 comments:
Post a Comment